বাংলাদেশে ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে মামলা হয়েছিল হাই কোর্টে। এদিকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা ইসকন এবং হিন্দুদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে উস্কানিমূলক মন্তব্য করে চলেছেন। এই আবহে এবার বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে বড় মন্তব্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে চলেছে ধারাবাহিক ভাবে। সেখানে ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে মামলা হয়েছিল হাই কোর্টে। এদিকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা ইসকন এবং হিন্দুদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে উস্কানিমূলক মন্তব্য করে চলেছেন। এই আবহে এবার বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে বড় মন্তব্য করলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মাণিক সাহা। বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সাফ কথা, ‘ভারত ছাড়া বাংলাদেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়’।
আজ মাণিক সাহা বলেন, ‘বংলাদেশে কী হাল, তা তো সবাই জেনেই গিয়েছে। রাজনীতির সঙ্গে ইসকনের কোনও যোগ নেই। তারপরও যেভাবে ইসকনের ওপর হামলা হচ্ছে, তা খুবই দুঃখনজনক। বাংলাদেশে এই ধরনের ঘটনা ঘটা উচিত নয়। আমাদের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ইতিমধ্যেই বলে দিয়েছে এই বিষয়ে। এই লোকেদের নিরাপত্তা দিতে হবে। বিশেষ করে ওখানকার সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর যে এত আক্রমণ হচ্ছে, তা যেন না করা হয়। এখনও সময় আছে, বাংলাদেশিদের চিন্তা করা উচিত। শান্তি ফিরলে সবার জন্যেই তা ভালো হবে। বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্যেও তা ভালো হবে। ভারত ছাড়া বাংলাদেশের উন্নয়ন কখনও সম্ভব নয়।’
এর আগে সম্প্রতি বাংলাদেশে গ্রেফতার করা হয় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে। তাঁর গ্রেফতারির পর থেকে আরও উত্তাল হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ ও বাংলাদেশ সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোট নামে দুটি সংগঠন বর্তমানে ‘বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের’ ব্যানারে আন্দোলন করছে। সেই জোটের মুখপাত্র করা হয়েছে চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুকে।
প্রসঙ্গত, গত ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে সমাবেশ করেছিল বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ। সেই সমাবেশে ভাষণ দিয়েছিলেন চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুও। সেই সমাবেশেই নাকি তিনি বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা করেছিলেন। এই অভিযোগেই চট্টগ্রামে একটি রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করেন বিএনপি নেতা ফিরোজ খান। গত ৩১ অক্টোবর চিন্ময় দাস-সহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন সেই নেতা।
সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই গত ২৫ নভেম্বর ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুকে গ্রেফতার করে ঢাকা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা। এরপর তাঁকে চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। এদিকে অভিযোগ, চিন্ময় প্রভুকে কারাগারে ওষুধ দিতে দেওয়া হয়নি পুলিশের তরফে। ধৃত হিন্দু নেতাকে মানসিক এবং শারীরিক ভাবে হেনস্থা করার অভিযোগও উঠেছে। এদিকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতারের ঘটনার জেরে বাংলাদেশে সংখ্য়ালঘুদের মধ্য়ে শোরগোল পড়ে যায়। হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদ এই গ্রেফতারির তীব্র নিন্দা করেছে। এদিকে চিন্ময় প্রভুর মুক্তির দাবিতে ঢাকা, চট্টগ্রাম সহ বিভিন্ন জায়গায় রাস্তায় নেমেছেন কয়েক হাজার হিন্দু। এরই মধ্যে প্রতিবাদী বাংলাদেশি হিন্দুদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে।
২৬ নভেম্বর চট্টগ্রামের আদালতে বাইরে হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেকে জড়ো হয়েছিলেন চিন্ময় প্রভুর গ্রেফতারির প্রতিবাদ জানাতে। সেই জনতার ওপর নির্বিচারে পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিকে এই সংঘর্ষে এক আইনজীবী খুন হন। এদিকে বাংলাদেশের হিন্দু সন্ন্যাসীকে জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-৬। সেদিন সংঘর্ষে এক আইনজীবী নিহত হন বলেও দাবি করা হয়। সেই খুনের ঘটনায় ৭ জন হিন্দুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।