বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ২০২৪-২৫ মৌসুমের কোয়ালিফায়ার-২ ম্যাচে চট্টগ্রাম কিংস নাটকীয়ভাবে খুলনা টাইগার্সকে ২ উইকেটে পরাজিত করে ফাইনালে পৌঁছেছে। মিরপুরের শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচটি উভয় দলের সমর্থকদের জন্য ছিল উত্তেজনায় ভরা। শেষ ওভারে ১৫ রানের প্রয়োজন হলে আলিস আল ইসলামের বীরত্বপূর্ণ ব্যাটিংয়ে চট্টগ্রাম জয় নিশ্চিত করে। শেষ বলে ৪ রানের দরকার থাকায় আলিস এক্সট্রা কভারের উপর দিয়ে বাউন্ডারি মেরে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন।
টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে খুলনা টাইগার্স শুরুতে কিছুটা বিপর্যয়ের মুখে পড়ে। তবে শিমরন হেটমায়ারের ৩৩ বলে ৬৩ রানের ঝোড়ো ইনিংসে দলটি ৬ উইকেটে ১৬৩ রানের সম্মানজনক স্কোর গড়ে। জবাবে চট্টগ্রাম কিংসের শুরুটাও ভালো হয়নি; পারভেজ হোসেন ইমন (৪) এবং গ্রাহাম ক্লার্ক (৪) দ্রুত আউট হয়ে গেলে দলটি ৩৫ রানে ২ উইকেট হারায়। এরপর পাকিস্তানি খেলোয়াড় খাজা নাফায় এবং হুসেইন তালাত দলের হাল ধরেন। নাফায় ৪৬ বলে ৫৭ রানের ইনিংস খেলেন।
শেষ ওভারে জয়ের জন্য ১৫ রানের প্রয়োজন ছিল চট্টগ্রামের। আরাফাত সানি প্রথম বলে বাউন্ডারি এবং দ্বিতীয় বলে ২ রান নিয়ে সমীকরণ সহজ করেন। তৃতীয় বলে ২ রান নেওয়ার সময় আলিস আল ইসলাম চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন। তার পরিবর্তে শরিফুল ইসলাম মাঠে এসে চতুর্থ বলে বাউন্ডারি মারেন, তবে পঞ্চম বলে আউট হন। শেষ বলে ৪ রানের দরকার থাকায় আলিস আবার মাঠে ফিরে আসেন, যা নিয়ে খুলনা দলের খেলোয়াড়রা আপত্তি জানান। তবে আম্পায়াররা তাকে ব্যাট করার অনুমতি দেন এবং আলিস সেই সুযোগে বাউন্ডারি মেরে দলকে জয় উপহার দেন।
এই জয়ের ফলে চট্টগ্রাম কিংস বিপিএল ফাইনালে উঠেছে, যেখানে তারা ফরচুন বরিশালের মুখোমুখি হবে। এর আগে কোয়ালিফায়ার-১ ম্যাচে বরিশালের কাছে পরাজিত হয়ে চট্টগ্রামকে কোয়ালিফায়ার-২ খেলতে হয়েছিল। ফাইনাল ম্যাচটি মিরপুরের হোম অব ক্রিকেটে অনুষ্ঠিত হবে।
চট্টগ্রাম কিংসের এই জয় তাদের দলের দৃঢ় মানসিকতা এবং সংকটময় মুহূর্তে চাপ সামলানোর ক্ষমতার প্রমাণ দেয়। বিশেষ করে আলিস আল ইসলামের শেষ মুহূর্তের বীরত্বপূর্ণ ব্যাটিং এবং খাজা নাফায়ের স্থিতিশীল ইনিংস দলকে জয়ের পথে নিয়ে যায়। অন্যদিকে, খুলনা টাইগার্সের জন্য এটি ছিল হতাশাজনক পরাজয়, বিশেষ করে শিমরন হেটমায়ারের দুর্দান্ত ইনিংস সত্ত্বেও।
ফাইনালে চট্টগ্রাম কিংস এবং ফরচুন বরিশালের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আশা করছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। দুই দলই তাদের সেরা ফর্মে রয়েছে, যা ফাইনাল ম্যাচটিকে আরও উত্তেজনাপূর্ণ করে তুলবে। চট্টগ্রাম কিংসের সমর্থকরা দলের এই সাফল্যে উচ্ছ্বসিত এবং ফাইনালে জয়ের জন্য আশাবাদী।
মোট而言, চট্টগ্রাম কিংসের এই জয় তাদের দলের শক্তি, দক্ষতা এবং সংকটময় মুহূর্তে চাপ সামলানোর ক্ষমতার প্রতিফলন। এখন দেখার বিষয়, ফাইনালে তারা ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে কেমন পারফর্ম করে এবং বিপিএল ট্রফি জয়ের স্বপ্ন পূরণ করতে পারে কিনা।