সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এয়ার ইন্ডিয়া বিমান দুর্ঘটনা পুরো দেশের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে এমন কিছু তথ্য যা শুধু চমকে দেওয়ার মতো নয়, বরং দেশের বিমান নিরাপত্তা নীতির ওপর বড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। এই দুর্ঘটনার মূল কারণ হিসেবে উঠে এসেছে পাইলটদের সিদ্ধান্ত, যান্ত্রিক ত্রুটি নয়।
কীভাবে ঘটল দুর্ঘটনা
ফ্লাইটটি উড্ডয়নের অল্প সময় পরেই ঘটে এক ভয়াবহ পরিস্থিতি। মাত্র এক সেকেন্ডের ব্যবধানে বিমানের উভয় ইঞ্জিনের ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচ বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে ইঞ্জিন দুটি সম্পূর্ণভাবে থেমে যায় এবং বিমানটি হঠাৎ করে উচ্চতা ও গতি হারাতে শুরু করে।
ককপিট ভয়েস রেকর্ডার অনুযায়ী, একজন পাইলট অপর পাইলটকে জিজ্ঞেস করেন— “তুমি কি ফুয়েল বন্ধ করেছ?” জবাবে বলা হয়, “আমি করিনি।” এই বিভ্রান্তি এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার অক্ষমতা বিমানের নিয়ন্ত্রণ হারানোর অন্যতম কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।
ককপিটের রেকর্ডে কী পাওয়া গেছে
তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী, ককপিটে পাইলটদের মধ্যে বিভ্রান্তি এবং পরস্পরের উপর নির্ভরতা স্পষ্ট ছিল। কোনো ধরণের আগাম সতর্কতা ছাড়াই দুই ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়, যার ফলে পাইলটদের হাতে কার্যকর কোনো বিকল্প সময় ছিল না।
তদন্তে কী জানা গেছে
- ইঞ্জিন ১ ও ইঞ্জিন ২ বন্ধ হয় এক সেকেন্ডের ব্যবধানে
- বিমানের সিস্টেমে কোনো যান্ত্রিক ত্রুটি পাওয়া যায়নি
- পাইলটদের সিদ্ধান্তের সমন্বয়হীনতা ছিল স্পষ্ট
- বিমানের ব্ল্যাকবক্সে কোনো প্রযুক্তিগত ত্রুটির চিহ্ন মেলেনি
- তদন্তে একটি সম্ভাব্য আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত বা ভুল বোঝাবুঝির দিকেও ইঙ্গিত পাওয়া গেছে
নিরাপত্তা প্রশ্নের মুখে
এই দুর্ঘটনা ভবিষ্যতে এমন ঘটনা রোধে কী ধরণের প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ দরকার, তা নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফ্লাইট সিমুলেশন প্রশিক্ষণের পাশাপাশি মানবিক দিক থেকেও পাইলটদের মানসিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা অত্যন্ত জরুরি।
উপসংহার
এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা শুধু একটি বিমানের নয়, বরং গোটা ভারতীয় বিমান চলাচল ব্যবস্থার সতর্কতার বার্তা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এয়ার ইন্ডিয়া, ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন (DGCA) এবং অন্যান্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর উচিত প্রতিটি রিপোর্ট গভীরভাবে বিশ্লেষণ করে ভবিষ্যতের জন্য আরও কঠোর নীতিমালা প্রণয়ন করা।