কক্সবাজার: কক্সবাজারে এক মার্কিন নারীকে শ্লীলতাহানির মামলায় স্থানীয় এক যুবককে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ রায় ঘোষণা করেন।
ঘটনার বিবরণ
গত ১১ মার্চ ভোরে কক্সবাজার শহরে হেঁটে যাওয়ার সময় মার্কিন নারীকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরেন স্থানীয় যুবক। ভুক্তভোগী চিৎকার করলে অভিযুক্ত পালানোর চেষ্টা করেন, তবে স্থানীয়রা দ্রুত তাকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
ঘটনার পরপরই মামলা দায়ের করা হয় এবং মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ অভিযোগপত্র দাখিল করে। আদালত দ্রুত শুনানি শুরু করে এবং অল্প সময়ের মধ্যেই সাক্ষ্যগ্রহণ ও রায় ঘোষণা সম্পন্ন হয়।
আসামির অতীত
দণ্ডপ্রাপ্ত যুবকের বিরুদ্ধে পূর্বেও শিশু ধর্ষণ মামলার রেকর্ড ছিল। জামিনে মুক্তি পাওয়ার পরই তিনি নতুন এ অপরাধে জড়িয়ে পড়েন। তার এই পুনরাবৃত্ত অপরাধ আদালতের রায়কে আরও কঠোর করে তুলেছে।
আদালতের মন্তব্য
রায় ঘোষণার সময় আদালত বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন কিংবা শ্লীলতাহানি সংক্রান্ত অপরাধের ক্ষেত্রে কোনও ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না। এ ধরনের অপরাধীরা সমাজের জন্য ভয়াবহ হুমকি এবং তাদের শাস্তি সমাজে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।
প্রতিক্রিয়া
রায়ের পর মানবাধিকার কর্মীরা বলেন, এ ধরনের দ্রুত বিচার বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থার জন্য একটি ইতিবাচক দৃষ্টান্ত। এটি ভুক্তভোগী নারীদের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনবে এবং অপরাধীদের জন্য একটি কঠোর বার্তা হয়ে দাঁড়াবে।
স্থানীয়রাও আদালতের এই রায়কে স্বাগত জানিয়ে বলেন, কক্সবাজারে পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ ধরনের কঠোর শাস্তি জরুরি ছিল।
প্রেক্ষাপট
বাংলাদেশে নারী নির্যাতন ও শ্লীলতাহানি সংক্রান্ত মামলাগুলো প্রায়ই দীর্ঘসূত্রিতার কারণে ভুক্তভোগীরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হন। কিন্তু এই মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল থেকে রায় পর্যন্ত অল্প সময়ের মধ্যে বিচার সম্পন্ন হওয়া এক নজিরবিহীন উদাহরণ।
আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এ ধরনের দ্রুত ও কঠোর শাস্তি ভবিষ্যতে নারী নির্যাতন প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
উপসংহার
মার্কিন নারীকে শ্লীলতাহানির মামলার এ রায় শুধু একটি অপরাধীর শাস্তি নয়; বরং বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থার সক্ষমতা ও নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার অঙ্গীকারের প্রতিফলন। এটি প্রমাণ করে, নারী ও শিশু নির্যাতনের ক্ষেত্রে রাষ্ট্র কোনও ছাড় দেবে না।