বুধবার ফজলুল হক মুসলিম হলের ভেতরে তোফাজ্জল হোসেনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয় শিক্ষার্থী শুক্রবার ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন পদার্থবিদ্যা বিভাগের মুহাম্মদ জালাল মিয়া, মাটি, পানি ও পরিবেশ বিভাগের সুমন মিয়া; ইনস্টিটিউট অব নিউট্রিশন অ্যান্ড ফুড সায়েন্সের মোত্তাকিন শাকিন; গণিতের আহসানউল্লাহ; আল হোসেন সাজ্জাদ ও ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ওয়াজিবুল আলম।
ঢাকা মহানগর হাকিম সাদ্দাম হোসেন হত্যা মামলায় ছয়জনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করে পুলিশ তাদের তার চেম্বারে হাজির করে।
তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করার পর অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের জেলহাজতেও পাঠান ম্যাজিস্ট্রেট।
তোফাজ্জলের মৃত্যুর ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বৃহস্পতিবার দুই সাবেক ছাত্রলীগ নেতাসহ ছয় শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শাহবাগ থানায় মামলা করেছে ঢাবি কর্তৃপক্ষ।
বরিশালের তোফাজ্জলকে চোর সন্দেহে বুধবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পিটিয়ে হত্যা করেছে।
পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত সাড়ে ৮টা থেকে ৯টার দিকে ছাত্ররা তোফাজ্জলকে চুরির সন্দেহে ধরে ফেলে। রাত ১০টা পর্যন্ত হলের গেস্টরুমে তাকে একাধিকবার মারধর করা হয়।
এক পর্যায়ে আবার লাঞ্ছিত হওয়ার আগে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিনেও খাওয়ানো হয়। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর তার অবস্থার অবনতি হয় এবং তাকে মধ্যরাতে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
ঘটনাটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর পরে জানা যায়, তোফাজ্জলের মানসিক অসুস্থতা রয়েছে। অনিচ্ছাকৃতভাবে তিনি হলে প্রবেশ করেন।
তার মৃত্যুর পর শিক্ষার্থীরা বিচারের দাবিতে রাজু ভাস্কর্যে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের অভ্যন্তরে কয়েকজন শিক্ষার্থীর হাতে মোবাইল চোর সন্দেহে ঘণ্টার পর ঘণ্টা নির্যাতনের শিকার তোফাজ্জল, যার মানসিক স্বাস্থ্যগত অবস্থা ছিল, তার মৃত্যুতে বৃহস্পতিবার দেশটি শোক ও ক্ষোভে ফেটে পড়ে।