রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ ইঙ্গিত ও রাজনৈতিক টানাপোড়েন
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাব উদ্দিনের হঠাৎ পদত্যাগের ইঙ্গিত রাজনৈতিক অঙ্গনে এক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। তিনি স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, আগামী ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনের পর তিনি আর দায়িত্ব পালন করতে চান না। তার অভিযোগ—অন্তর্বর্তী সরকার তাকে নিয়মিতভাবে উপেক্ষা করছে, গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক থেকে দূরে রাখছে এবং রাষ্ট্রপতির মর্যাদার সঙ্গে সাংঘর্ষিক আচরণ করছে। প্রেস উইং প্রত্যাহার ও আন্তর্জাতিক মিশন থেকে তার প্রতিকৃতি সরিয়ে নেওয়ার মতো ঘটনাগুলো তাকে গভীরভাবে আঘাত করেছে। তার ভাষায়, তিনি “অপমানিত” এবং “বিচ্ছিন্ন” বলে মনে করছেন।
সম্পর্কের অবনতি ও ক্ষমতার বিবর্তন
অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে রাষ্ট্রপতির সম্পর্ক দ্রুত খারাপের দিকে গেছে। দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা, সরকার পরিবর্তন এবং প্রধানমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে রাষ্ট্রপতির ভূমিকা কিছুটা দৃশ্যমান হলেও বাস্তবে কার্যনির্বাহী সিদ্ধান্ত থেকে তাকে দূরেই রাখা হয়েছে। দীর্ঘ মাস ধরে কোনো উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে না ডাকা, মতবিনিময়ের সুযোগ না দেওয়া এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া থেকে তাকে বাদ দেওয়ার ঘটনা তার অসন্তোষকে তীব্র করেছে। এতে স্পষ্ট যে ক্ষমতার কেন্দ্রগুলোতে সামঞ্জস্য নেই, বরং অস্বস্তিকর দূরত্ব তৈরি হয়েছে।
নির্বাচন, অনিশ্চয়তা ও ভবিষ্যতের প্রশ্ন
বাংলাদেশ এখন অত্যন্ত সংবেদনশীল এক রাজনৈতিক মুহূর্তে দাঁড়িয়ে। অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন দেশটির ক্ষমতার দিগন্তকে নতুন রূপ দিতে পারে। কে ক্ষমতায় আসবে, নতুন সরকার রাষ্ট্রপতির পদ নিয়ে কী সিদ্ধান্ত নেবে, এবং রাষ্ট্রীয় কাঠামোয় নেতৃত্ব কীভাবে পুনর্গঠিত হবে—এসব প্রশ্ন এখন প্রবলভাবে আলোচিত। রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ ইঙ্গিত এই অনিশ্চয়তাকে আরও তীব্র করেছে।
শেষ কথা: বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন মোড়ের পূর্বাভাস
রাষ্ট্রপতি সাহাব উদ্দিনের এই সিদ্ধান্ত শুধু ব্যক্তিগত ক্ষোভ নয়; এটি বর্তমানে ক্ষমতাসীন কাঠামোর ভাঙন, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং নেতৃত্বের সংকটের প্রতিফলন। আসন্ন নির্বাচন ও পরবর্তী সময়ই নির্ধারণ করবে দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কোন দিকে মোড় নেবে এবং রাষ্ট্রপতির পদ নিয়ে নতুন কোনো সমীকরণ তৈরি হবে কিনা।


