চোর সন্দেহে। এমন নয় যে চুরি করেছে এবং হাতেনাতে ধরা পড়েছে তাই রাগ। শুধুমাত্র সন্দেহে। ফোন চুরি হয়েছে দুপুরবেলা। তখন তোফাজ্জল সিনেই নেই। তোফাজ্জলকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে ধরা হয়েছে রাত্রি ৮টার সময় শুধুমাত্র বহিরাগত হিসাবে। সে বোকা মানুষ ছাত্রদের ফুটবল ম্যাচ দেখতে এসেছিল। মানসিক ভাবে অসুস্থ্য তাই কথাবার্তা অসংলগ্ন। কথা অসংলগ্ন কেন হবে? তাই তুইই দুরপুরবেলার ফোন চোর।
তারপর? মার। বেধড়ক মার। কারা মারছে? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী মেধাবী ছাত্ররা। মার খেতে খেতে, মার খেতে খেতে একসময় তোফাজ্জল ঝিমিয়ে পড়ে। তখন তাকে মেধাবী ছাত্ররা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিনে নিয়ে গিয়ে ভাত খাওয়ায়। জিজ্ঞেস করে, ‘কেমন হয়েছে রান্না?’,
সে উত্তর দেয়, ‘আল্লাহর রহমতে ভালো।’
ওরা ফেটে পড়ে উল্লাসে। কারণ খাওয়া শেষ হলেই আবার মারবে। আবার মারলো। জ্ঞান হারিয়ে ফেললো। চোখে মুখে জলের ছিটে দিয়ে জ্ঞান ফেরালো। জ্ঞানে ফিরতেই ছাত্রদের আবার উল্লাস। কারণ আবার মারবে। আবার মারলো। এবং মেরেই ফেললো।
লাশের মা নেই। বাবা নেই। দাদা নেই। সবাই মারা গ্যাছে আগেই। লাশ একদম একা। লাশ চেয়ে চেয়ে ভাত খেতো তবু চুরি করতো না কখনও। লাশ এখন মর্গে ঘুমাচ্ছে। লাশ আর কারোর কাছে ভাত খেতে চাইবে না কোনওদিন।
আর আমি, এই খবর দেখার পর থেকে কিছুতেই ভাত খেতে পারছি না এক গাল।