বাংলাদেশের অর্থনৈতিক খাতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান শিবলী রুবায়েত-উল-ইসলামসহ মোট ৮ জনের পাসপোর্ট বাতিল করেছে সরকার। এই সিদ্ধান্তটি দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক পরিবর্তনের প্রেক্ষিতে নেওয়া হয়েছে।
পাসপোর্ট বাতিলের কারণ ও প্রেক্ষাপট:
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ব্যাপক পরিবর্তন দেখা যায়। নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর বিভিন্ন প্রশাসনিক ও আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। এর অংশ হিসেবে, সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, যেসব ব্যক্তির পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে, তাদের নতুন করে পাসপোর্ট ইস্যু করা হবে না। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এ বিষয়ে সাংবাদিকদের জানান, “বাংলাদেশের মিশন ট্রাভেল পাস ইস্যু করতে পারে শুধু দেশে ফিরে আসার জন্য। অন্য দেশে যাওয়ার জন্য ট্রাভেল পাস ইস্যু করতে পারে না।”
বাতিলকৃত পাসপোর্টের তালিকা:
সরকারি সূত্র অনুযায়ী, সাবেক বিএসইসি চেয়ারম্যান শিবলী রুবায়েত-উল-ইসলাম ছাড়াও আরও ৭ জনের পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে। তবে, নিরাপত্তাজনিত কারণে তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি। এছাড়া, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৭৫ জনের পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
প্রতিক্রিয়া ও বিশ্লেষণ:
পাসপোর্ট বাতিলের এই সিদ্ধান্ত দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই পদক্ষেপটি প্রশাসনিক শুদ্ধি অভিযানের অংশ, যা দেশের সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হতে পারে। তবে, সমালোচকরা এটিকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা হিসেবে দেখছেন এবং এর ফলে দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন।
আইনি প্রক্রিয়া ও ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ:
পাসপোর্ট বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি প্রতিকার চাওয়ার সুযোগ রয়েছে। বাতিলকৃত পাসপোর্টধারীরা আদালতের শরণাপন্ন হতে পারেন। তবে, সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, যাদের পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে, তাদের নতুন করে পাসপোর্ট ইস্যু করা হবে না। তারা যদি দেশে ফিরতে চান, তাহলে ট্রাভেল পাস ইস্যু করা হতে পারে।
সারসংক্ষেপ:
সাবেক বিএসইসি চেয়ারম্যান শিবলী রুবায়েত-উল-ইসলামসহ ৮ জনের পাসপোর্ট বাতিলের সিদ্ধান্ত দেশের বর্তমান রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক প্রেক্ষাপটে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এর প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে সময়ের সাথে সাথে আরও স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে। দেশের সুশাসন ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় এই ধরনের পদক্ষেপ কতটা কার্যকর হবে, তা ভবিষ্যৎই বলে দেবে।